থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় বন্যায় ১১৬ প্রাণহানি
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৭:৩০ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় মিলিতভাবে অন্তত ১১৬ জনের প্রাণহানির কারণ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
থাইল্যান্ডে বন্যায় বিপর্যস্তদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিতে উদ্ধারকারী দলগুলো ড্রোন ব্যবহার করছে। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ছাদে আটকে পড়া মানুষের কাছে খাবার ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে। দেশটিতে টানা এক সপ্তাহ ভারী বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলের ৯টি প্রদেশে বিপর্যয় নেমেছে, যার ফলে ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৬১-তে পৌঁছেছে। সেখানে তিনটি প্রদেশে ভূমিধস ও বন্যায় আটকে পড়া মানুষ উদ্ধার করতে উদ্ধারকর্মীরা কঠোর চেষ্টা করছেন।
থাইল্যান্ডে উদ্ধারকাজে নৌবাহিনীর বিমানবাহী রণতরী, ২০টি হেলিকপ্টার, ট্রাক ও ছোট নৌকাসহ নানা সংস্থান মোতায়েন করা হয়েছে। পানি কিছু এলাকায় সাত ফুট পর্যন্ত উঠায় স্থানীয়দের নৌকায় সরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হাট ইয়াই শহরে বৃহস্পতিবার থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। এর ফলে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন ও জরুরি সেবা চালু করার কাজ সহজ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ থাইল্যান্ডে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। প্রতিবেশী মালয়েশিয়ার সাতটি অঙ্গরাজ্যেও বন্যা দেখা গেছে; এতে অন্তত দু’জনের মৃত্যু এবং ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া বাধ্য হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় ৬ কোটি মানুষের দ্বীপে ট্রপিক্যাল সাইক্লোনের আঘাতের ফলে প্রাণঘাতী বন্যা ও ভূমিধস হয়েছে। কমপক্ষে ১০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো উদ্ধারকাজে বাধা সৃষ্টি করছে।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল কমপাস টিভির ফুটেজে দেখা গেছে, পাহাড়ের ঢাল বরাবর ভূমিধস নেমে এসেছে এবং ৩.৫ ফুট উচ্চতার পানির স্রোত গাছপালা ও ধ্বংসাবশেষ নিয়ে ছুটে চলেছে। উদ্ধারকর্মীরা রাবারের নৌকায় মানুষকে নিরাপদে সরাচ্ছেন। পশ্চিম সুমাত্রার ছবিতে দেখা গেছে, বন্যার স্রোতে ভেসে যাওয়া গাড়ির স্তূপ ও মৃতদেহ বহন করা হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই চরম বৈরী আবহাওয়া ফিলিপাইনের টাইফুন কোটো এবং মালাক্কা প্রণালিতে অস্বাভাবিকভাবে সৃষ্ট সাইক্লোন সেনইয়ারের সক্রিয়তার পারস্পরিক প্রভাবের কারণে হতে পারে।