ট্রাম্পের ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা ২৮ থেকে নেমে এলো ১৯ দফায়


ট্রাম্পের ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা ২৮ থেকে নেমে এলো ১৯ দফায়

জেনেভায় টানা আলোচনার পর ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার খসড়া বড় ধরনের পরিবর্তনের মুখে পড়েছে। ২৮ দফার প্রস্তাব সংক্ষিপ্ত হয়ে নেমে এসেছে ১৯ দফায়, যা কিয়েভ ও ইউরোপীয় অংশীদারদের উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে নতুন আলোচনার পথ খুলে দিয়েছে।

টিআরটি ওয়ার্ল্ডের সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, জেনেভার বৈঠকের পর মার্কিন ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে শান্তি পরিকল্পনাটি এখন ১৯ দফায় সীমাবদ্ধ। যদিও তারা আলোচনাকে ইতিবাচক অগ্রগতি বলে উল্লেখ করেছেন, তবু জানিয়েছেন যে প্রস্তাবটি এখনো চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়নি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, “অসাধারণ অগ্রগতি” হয়েছে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায়, তবে এখনো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি রয়েছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের যৌথ বিবৃতিতেও বৈঠকে “গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি”র কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

ফিনান্সিয়াল টাইমসকে কয়েকজন অংশগ্রহণকারী জানান, আগের খসড়া থেকে মোট ৯টি প্রস্তাব বাদ দেওয়া হয়েছে, যদিও কোন অংশগুলো সরানো হয়েছে তা তারা প্রকাশ করেননি।

ইউরোপীয় কর্মকর্তারা আগেই কিছু বিষয়ে আপত্তি তুলেছিলেন, বিশেষ করে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং জব্দ করা রুশ সম্পদের ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলো নিয়ে। তারা পরিষ্কার করে বলেন, এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়নেরই।

ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব পরিকল্পনা থেকে দফা কমানোকে “এক ধাপ এগোনো” বলে অভিহিত করেন। তবে তার ভাষায়, এখনো সামনে রয়েছে বেশ কিছু “বড় জটিলতা”।

দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত ২৮ দফার পরিকল্পনাটি জেনেভায় খুঁটিয়ে আলোচনা করে ওয়াশিংটন, কিয়েভ ও ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিরা।

শনিবার মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, এই পরিকল্পনা তার “চূড়ান্ত প্রস্তাব” নয়। এর মধ্যেই কিয়েভ ও তাদের মিত্রদের মধ্যে খসড়া নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

প্রাথমিক খসড়ায় উল্লেখ ছিল, ইউক্রেনকে রাশিয়ার কাছে আরও কিছু এলাকা ছাড়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করতে হতে পারে, সামরিক বাহিনীর আকার সীমিত করতে হতে পারে এবং ন্যাটোতে যোগদানের প্রচেষ্টা আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যাগ করতে হতে পারে। ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন প্রস্তাবের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক জবাব দেওয়ার জন্য।

পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মন্তব্য করেন, “আমরা কি আমাদের মর্যাদা হারানোর ঝুঁকি নেব, নাকি গুরুত্বপূর্ণ একটি মিত্রকে হারানোর ঝুঁকি নেব, আমাদের সামনে এখন সেই কঠিন সিদ্ধান্ত অপেক্ষা করছে।”

এদিকে শনিবার ৯টি ইউরোপীয় দেশ, জাপান, কানাডা এবং ইইউয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা এক যৌথ বিবৃতিতে উদ্বেগ জানান যে ইউক্রেনের সামরিক শক্তি সীমিত করার প্রস্তাব দেশটিকে ভবিষ্যতে নতুন হামলার ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×