ভূমিকম্পে রেলিং ধসে ছেলের মৃত্যু, মা গুরুতর আহত
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০১:০৭ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০২৫
হঠাৎ সকালবেলা বাজারে গিয়ে আর ফিরলেন না সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফি। ঢাকার বংশালে ভূমিকম্পের সময় ভবনের রেলিং ধসে পড়ে মারা যান এই মেধাবী তরুণ। তার মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ সহপাঠী ও পরিবার। রাফির গ্রামের বাড়ি বগুড়ায়। দুই ভাইবোনের মধ্যে তিনি বড়। বাবা দিনাজপুরে চাকরি করেন। হলে সিট পাওয়া সত্ত্বেও তিনি ঢাকায় মা ও বোনের সঙ্গে থাকতেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সহপাঠী অপু জানান, সকালে রাফি মায়ের সঙ্গে মাংস কিনতে বংশালের কসাইটুলিতে যান। তারা নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঠিক তখনই শুরু হয় প্রচণ্ড ভূমিকম্প। কাঁপুনিতে দোকানের ভবনের রেলিং ভেঙে নিচে পড়লে মা-ছেলের ওপরই তা এসে পড়ে।
আশপাশের লোকজন দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে গেলে চিকিৎসকরা রাফিকে মৃত ঘোষণা করেন। ভিডিও ফুটেজ ও ছবিতে দেখা গেছে, তার মাথা ও মুখমণ্ডল মারাত্মকভাবে থেঁতলে গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাফির মাকে ইতোমধ্যে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। তিনি গুরুতর আহত হলেও প্রাণসংকট নেই। অপু বলেন, রাফির মৃত্যুর খবর এখনো তার মাকে জানানো হয়নি; তিনি প্রচণ্ড মানসিক আঘাতের মধ্যে আছেন।
মর্মান্তিক এই খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে এসেছে রাফির একমাত্র বোন। ভাইয়ের লাশ ও মায়ের কষ্ট তার উপর শোকের পাহাড় হয়ে নেমে এসেছে।
এর আগে সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রাজধানীর নানা স্থানে ভবন হেলে পড়া ও বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭, যা মধ্যম মাত্রার।
বংশাল থানার ডিউটি অফিসার সময় সংবাদের কাছে নিশ্চিত করেছেন, কসাইটুলিতে পাঁচতলা ভবনের রেলিং ভেঙে তিনজন পথচারী নিহত হন। তাদের একজন রাফি। বাকি দুইজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। মরদেহগুলো সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।
লালবাগ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি জানান, কসাইটুলির ওই ভবনের অংশবিশেষ বা সানসেট ভেঙে ঘটনাস্থলেই দুজন মারা যান। আরেকজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়।